চেন্নাই: ২০০৮-এ জন্মেছে ছেলে। তখন থেকেই জীবন্মৃত। ১০ বছর ধরে অপেক্ষা করেছেন বাবা, যদি সেরে ওঠে সে। কোথাও কোনও আশা দেখতে না পেয়ে নিরুপায় বাবা মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন, অসহ এই জীবন থেকে সন্তানের মুক্তি চেয়ে। এ বছর মার্চে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, সসম্মানে বাঁচার অধিকার সংবিধানের ২১ নম্বর ধারায় নাগরিকের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে আর এর মধ্যে সম্মান নিয়ে মৃত্যুর অধিকারও রয়েছে। এই রায়ের পর চেন্নাইয়ের আর থিরুমণিই প্রথম স্বেচ্ছামৃত্যু চেয়ে আবেদন করলেন। থিরুমণির ছেলে টি পারভেন্ধন মৃগী রোগের শিকার। ওষুধ খেলেও প্রতিদিন ১০-২০ বার খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয় সে। দিনে তার সর্বাধিক খিঁচুনির সংখ্যা ১৫০। পেশায় দর্জি থিরুমণির প্রতি মাস ছেলের ওষুধের পিছনে ১০,০০০ টাকা করে খরচ হয়। যত চিকিৎসক তিনি দেখিয়েছেন, প্রত্যেকেই জানিয়ে দিয়েছেন, ছেলের সুস্থ হয়ে ওঠার অবকাশ নেই। এই পরিস্থিতিতে আদালতের কাছে তাঁর আবেদন, তারা যেন তাঁকে অনুমতি দেয়, যাতে তিনি ছেলেকে সবরকম ওষুধ ও খাবারদাবার দেওয়া বন্ধ করে দিতে পারেন, যাতে তার মৃত্যু সহজ ও ত্বরাণ্বিত হয়। আদালত রাজ্য সরকারকে চিকিৎসকদের একটি প্যানেল গঠনের অনুরোধ করেছে, যাঁরা আদালত নিযুক্ত বিশেষজ্ঞ কমিটিকে এ ব্যাপারে পরামর্শ দেবেন। তারপর কমিটি ছেলেটিকে পরীক্ষা করবে ও আদালতে রিপোর্ট দেবে। ২৩ তারিখ পর্যন্ত মামলার শুনানি স্থগিত রেখেছে আদালত, তারপর রাজ্য সরকার আদালতকে চিকিৎসকদের নাম জানাবে। পারভেন্ধনের জন্ম ২০০৮-এর ৩০ সেপ্টেম্বর। জন্মানোর পর কাঁদেনি সে। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, সে হাইপক্সিক ইস্কিমিক এনসেফ্যালোপ্যাথির শিকার। সে জেগেই থাকে কিন্তু নিজের সম্পর্কে অথবা চারপাশে কী ঘটছে সে সম্পর্কে কোনও চেতনা নেই। হাত পা নাড়াতে পারে না ছেলেটি, বসতেও পারে না, শোয়া অবস্থাতেই জোর করে খাইয়ে দিতে হয় অর্ধশক্ত খাবার। মলমূত্র কীভাবে কখন হয়ে যায় সে জানতেই পারে না। থিরুমণির অন্য দুই সন্তানকে এ জন্য সমাজে অস্বস্তিতে পড়তে হয়, তাদের সঙ্গেও কেউ মিশতে চায় না। কোনও হোমও রাখতে চায় না পারভেন্ধনকে, এই পরিস্থিতিতে তার স্বেচ্ছামৃত্যুই তাকে ও তার বাবা মাকে নিষ্কৃতি দিতে পারে বলে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
from home https://ift.tt/2N9t4CM
No comments:
Post a Comment
Please let me know